এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

পাওয়া না-পাওয়া

 



পাওয়া না-পাওয়া---


কোনদিন নাইবা হলাম কারো চলার সঙ্গী,

নাইবা হলাম কারো খোপার ফুল। 

চন্দ্রমুখী তো অনেক দূরের কথা,

কখনো পেলাম না পারুরো দেখা। 

তবে বেশ ভালো আছি, 

পাওয়া না পাওয়ার কোন রেশ নেই পাশাপাশি।

নেই কোন পিছুটান, আমি যেন শুধুই আমার,

আটকে নেই কোন বাধনে মায়ার।

মুক্ত আকাশে যেন আমি এক মুক্ত পাখি,

স্বপ্ন দেখেনা কোন এ দুটি আখি। 

জোছনা ভরা রাত গুলো চেয়ে আকাশ পানে,

দীর্ঘশ্বাসে কাটে রাত তারা গুনে গুনে।

তবে বেশ ভালো আছি,

পাওয়া না পাওয়ার কোন রেশ নেই পাশাপাশি।

জীবনের অংক মেলাইনা আর,

শুধুশুধু গোলমাল বাধে বার বার।

সব শৃঙ্খল ছিন্ন আজ,

জীবন কে দিয়েছি আজ নিজেরি সাজ।

হ্যা, আমি সত্যিই বেশ ভালো আছি,

পাওয়া না পাওয়ার রেশ কোনদিন আর হবেনা পাশাপাশি 


🖋️ লতিফুর রহমান পলাশ

বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১

অবসাদ





বিরহ বিষাদের অনলে পুড়ে যার মন,

নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে করে সে মৃত্যু আলিঙ্গন। 


বেঁচে থাকে দেহ তার আত্মা পরপারে, 

বিচ্ছিন্ন জীবন তার উদাস ভবঘুরে। 


থাকেনা তার সুখদুঃখ থাকেনা ভালোমন্দ,

নয়নে তার দৃষ্টি থেকেও হৃদয় থাকে অন্ধ। 


এই জগতে এমন মানুষ আছে ভুরিভুরি,

আপনেরাই বুকের মাঝে মেরেছে যাদের ছুরি।


🖋️ লতিফুর রহমান পলাশ

শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১

অভিশপ্ত রাত




 অভিশপ্ত রাত---


এই রাত সেই রাত, কেটে যায় কতো রাত।

এই ভাবে বলে দেওয়াটা কত সহজ তাইনা! 


কিন্তু তুমি কি জানো প্রিয়ংবদা,

এই একেকটা রাত কতটা দীর্ঘ ?

যতটা দীর্ঘতম দূরত্ব আসমান আর জমিনের। 

যতটা দীর্ঘতম দূরত্ব তোমার আর আমার হৃদয়ের।


জমিনের কেউ যেমন দূরত্বের কারণে আসমান ছুঁতে পারেনা,

ঠিক তেমনি আমার হৃদয়ও তোমার হৃদয় ছুঁতে পারেনা।

আর এদের মতো করে আমার রাত গুলোও ঘুম ছুঁতে পারেনা।

রাত আর আমার দুচোখের ঘুমের যে যোজন যোজন দূরত্ব। 


রাত, গভীর কালো রাত।

এই রাত গুলোই চোখ বন্ধ করলে মনে করিয়ে দেয় কতটা ক্ষতি আর ক্ষত নিয়ে আজও বেঁচে আছি।

নিমিষেই তখন পথ হারিয়ে ফেলে আমার দুচোখের ঘুম।

বেদনার রোষানলে পুড়তে থাকে ক্ষত-বিক্ষত আহত হৃদয়। 

এই অনল জ্বলতেই থাকে জ্বলতেই থাকে।

দিনের আলোর ব্যস্ততায় যদিও কিছুটা সময় বিরাম নেয় এই অনল,

পরক্ষণেই আবার পূর্ণ শক্তি সঞ্চয় করে

অপেক্ষায় থাকে আরও একটি রাতের।

এভাবেই রাতের পর রাত চলছে আমার

হৃদয় পুড়ানোর খেলা।


বলতে পারো প্রিয়ংবদা, 

এভাবে আর কতো রাত আমার হৃদয় পোড়ালে তোমার হৃদয় হবে সিক্ত ? 

কতো সহস্র আঘাতের পর তুমি হবে ক্লান্ত আর তিক্ত ?


আচ্ছা তোমার কাছে রাত মানে কি ?

আমার তো খুব ইচ্ছে করে আমার রাত গুলো হবে,

নির্মল ঘুম আর ঘুমের ঘোরে মিষ্টি সুখের স্বপ্ন।

সুন্দর একটা রাতের পর আবার পরিশুদ্ধ একটা সকাল।

এইটুকু আশা তো মানুষ হিসেবে থাকতেই পারে।

কিন্তু এই পোঁড়া কপালে শেষ কবে এমন রাত পাড়ি দিয়েছি সেটা ভুলেই গেছি।

যদি জানতাম আমার রাতগুলো এমন নিকষকালো আঁধারে হারিয়ে যাবে তাহলে ঐ তারিখ টা স্মৃতিতে গেঁথে নিতাম আমৃত্যু।


🖋️ লতিফুর রহমান পলাশ

বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১

কবিতা প্রেম

 



কবিতা প্রেম---


কবিতার প্রেমে পড়েছিলাম সাতশত সত্তুর বছর আগেই, 

কিন্তু কবিতা আমায় প্রেম দিলো কই!


এক বিশাল আকাশ প্রেম নিয়ে গোলাপি রঙের শিমুল ফুলের মালা গেঁথেছিলাম কবিতাকে পড়াবো বলে,

কিন্তু কবিতা আমায় বুঝিয়ে দিলো শিমুল ফুলের মালা গলে পড়েনা কেউ। 

কবিতা শুধু শিমুল ফুলের মালাই দেখলো,

দেখলোনা মালার পিছনের আমার এক বিশাল আকাশ প্রেম।


একদিন খুব ইচ্ছে হলো কবিতাকে লিখবো,

কি লিখবো ভাবতে ভাবতে রাত পেড়িয়ে ভোর হয়ে গেলো, কিন্তু কবিতাকে লেখা হলোনা,

আর এদিকে কবিতাকে লিখনি বলে অভিমান করে সে চলে গেলো,

কিন্তু বুঝতেই চাইলোনা যে তাকে না লিখলেও আমার সারাটা ভাবনা জুড়েই সে ছিলো।


কবিতা খুব অভিমানী, 

আমি বিরহ পেলেই সে আমার কাছে আসে।

যখন হাসি খুশি আনন্দ বিরাজ করে আমার মস্তিষ্কে তখন সে অভিমান করে দূরে থাকে।

আমার বিরহ তার আগমন, আমার প্রশান্তি তার বিচ্ছেদ। 

আসলে আমার প্রশান্তি সহ্য হয়না কবিতার।

কবিতা শুধু প্রেম নিয়েই গেলো, কিন্তু আমায় দু দন্ড প্রেম দিলো কই!


কবিতারা আসলে এমনই হয়,

কবিতা যে কখনো সুখের বস্তু নয়।

যখন ভস্মীভূত হয় প্রেমিক আত্মা, 

তখনই জেগে উঠে কবিতার স্বত্বা।

প্রেমিকের হৃদয়ে যত রক্ত বন্যা বয়,

কবিতারা সে রক্ত শুষে ততো রিষ্ট পুষ্ট হয়।

কবিতায় যে হৃদয় পারে যত রক্ত দিতে,

পাঠকের মন ততো সে কবিতা নেয় জিতে।


কবিতারা আরও নিয়ে যায় একটা মানুষের

প্রেম, ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতি, মনের প্রশান্তি ও তার ভালো থাকা।

তারা শুধু দিতে পারে বিরহ,

স্মৃতি বিজারিত অতীত, ব্যর্থ কিছু স্বপ্ন ভঙ্গের কালো অধ্যায় আর উড়াতে পারে ভাঙা চোরা হৃদয় গৃহস্থালির পোড়া কিছু ছাই।


🖋️ লতিফুর রহমান পলাশ