এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

জীবনের মোহ




 "জীবনের মোহ"


জীবনের এই খেলা ঘরে;

কেউ জিতে কেউ হারে,

মিছে মায়ায় ব্যাকুল মনা;

কে বুঝাবে তারে? 


জন্ম মনার শুন্যতে আর;

যাবেও শুন্য হাতে,

সঙ্গের সাথী কেউ হবেনা;

যাবেও না কেউ সাথে। 


দমে দমে জেতার লড়াই;

বাঁধে মনা সুখের ঘর,

যেতে হবে সবই ছেড়ে;

আপন হবে সব পর।


ক্ষণিকের এই মোহ মায়ায়;

কতো উত্থান পতন,

সব হারিয়ে নিঃস্ব মনা,

আবার পায় মানিক রতন।


সুখের তরে সকল মনাই;

ভাসায় যে তার ভেলা,

কেউ হয়ে যায় পার আবার;

কারো ডুবে বেলা।


তবুও মনার চাওয়া পাওয়ার;

নেইতো কোন শেষ, 

বেলা শেষে শূন্য মনা;

ফিরবে আপন দেশ। 


✍️ লতিফুর রহমান পলাশ 

সোমবার, ৩০ মে, ২০২২

একজন পথশিশুর আত্মকথা



"একজন পথশিশুর আত্মকথা"


জন্ম আমার গরীর ঘরে।

যখন একদম ছোট ছিলাম, বুঝার মতো বয়স হয়নি,

জানিনা বাবা মা কতটা বিলাসিতা বা কষ্টে রেখেছে। 

যখন একটু বড় হলাম, একটু একটু বুঝতে শিখলাম, 

তখন থেকেই শুরু হলো আমার ত্যাগী জীবন। 

আমার বয়সী কতো বাচ্চা দেখেছি মায়ের হাত ধরে স্কুলে যেতে।

আমার কখনো মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি।

বাবা দিনমজুর, মা করে পরের বাড়ি কাজ।

কে ধরবে আমার হাত, আর কেই-বা আমায় নিয়ে যাবে স্কুলে!

দুয়েক দিন যদিও পাড়ার অন্য বাচ্চাদের দলে যোগ দিয়ে স্কুলে গিয়েছি,

তবুও আমার শেখা হয়নাই নিজের নামটা লেখা।

বড়লোকদের বাচ্চাদের দেখেছি গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো, 

আর নানা রকমের খাওয়া-দাওয়া। 

গরীব বলে গাড়ির কাঁচও কখনো হয়নি ছুঁয়ে দেখা,

আর হয়নি ঐ খাবার গুলোর নাম গুলোও জানা।


একটা সময় মা হারালো, বাবাও হারালো।

ভবে হলাম জনম জনমের এতিম। 

স্বার্থপর এই দুনিয়ায় আপন বলতে কেউ রইলোনা।

পাশে এসে কেউ দাড়ালো না সহায় সম্বলহীন এই অসহায়ের। 

কতো দিনের দিনের পর দিন না খেয়ে কাটিয়েছি সে খবরও কেউ রাখেনি। 

চারিদিকে হতাশা যেন ঘিরে রেখেছিল আমাকে।

জীবনের কোন উদ্দেশ্য ছিল না।

চারিদিকে যেন হাহাকার।

ক্ষুধা  আর পানি পিপাসা বুক ফাটিয়ে করে দিতো চৌচির। 

ভাবতাম সৃষ্টিকর্তা কেন এত কষ্ট দেয় আমায়।

খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে কতবার যে চুরি করেছি,

আর কতবার যে ধরা পড়ে মার খেয়েছি সে হিসেব রাখিনি।

এভাবে চলতে চলতেই শৈশব কাটিয়ে কৈশোরে পা রেখেছি।

চারিদিকে হন্য হয়ে খুজেছি কাজ।

কত অবহেলা লাঞ্ছনা সহ্য করে করেছি মানুষের কাছে।

যে বয়সে যে কাজ করা সম্ভব নয়, 

জীবিকার তাগিদে সে কাজ করেছি জীবন বাজি রেখে। 

কোথাও পাইনি আমার উপযুক্ত কাজের মূল্য।

কোথাও অর্ধেক আর কোথাও একেবারেই পাইনি,

এভাবেই কাটিয়ে দিয়েছি পুরো কৈশোর। 


আমার বয়সী ছেলে মেয়েরা কত সুন্দর স্কুল ড্রেস পড়ে আমার সামনে দিয়ে যেতো। 

আমার মনও তখন ছটফট করতো স্কুলে যাওয়ার জন্য। 

মাঝে মাঝে খুব বেশি কষ্ট হলে কাজ ফাঁকি দিয়ে স্কুলের সামনে গিয়ে বসে থাকতাম। 

চোখের কোণে জল জমা হতো স্কুলে যেতে না পারার বেদনায়।

অনেক রাগ হতো সৃষ্টিকর্তার উপর।

চিৎকার করে বলতাম, 

হে খোদা, কেন গরীব করে পাঠালে আমায় এ ধরায়।


এভাবেই চলছে জীবন।

জানিনা আর কতদিন এভাবে চলবে,

দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য জীবন সংগ্রাম। 

তবুও বেঁচে আছি এই আশায়, 

হয়তো কোনদিন ঐ সৃষ্টিকর্তা করে দিবেন তিনবেলা পেটপুরে 

খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা।

হ্যা ভাই, আমরা পথ শিশু,

কিন্তু আমরাও মানুষ। 

আপনি আমি একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট মানুষ। 


বিঃদ্রঃ- আসুন না ভাই এই ঈদে যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী এই পথশিশুদের পাশে দাড়াই।

খুশী গুলো ভাগ করে নেই এই অসহায়দের সাথে। 

ওরাও তো আমাদের মতই রক্ত মাংসের মানুষ। 


✍️ লতিফুর রহমান পলাশ 

রবিবার, ২৯ মে, ২০২২

জীবন মানেই পরাজয়

 


"জীবন মানেই পরাজয়"


জীবন নিয়ে আজকাল লিখতে ইচ্ছে করেনা।

কারন পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ কোনও না কোন ভাবে জীবনের কাছে পরাজিত। 


আপনি কি কখনো এমন কোন মানুষ পেয়েছেন যে তার জীবন নিয়ে পরিপূর্ণ তৃপ্ত? 

আমি কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে পাইনি।


আমার মানুষ সম্পর্কে জানার খুব আগ্রহ। 

আমার জীবনে যত মানুষ দেখেছি, যত মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছি তারা কেউ-ই পরিপূর্ণ তৃপ্ত না।

দুয়েক জন যদিও দাবি করে তারা পরিপূর্ণ, 

কিন্তু তাদের জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে তারাও অতৃপ্ত। 

কিছু মানুষ আছে তারাতো মনের সাথে চরম পর্যায়ে সংঘর্ষ করেও মানুষের কাছে নিজেকে পরিপূর্ণ প্রমাণ করার চেষ্টা করে। 

একটু খেয়াল করে দেখুন এমন অসংখ্য মানুষ আছে আপনার আশেপাশেই। 


আসলে মানুষের এই জীবনটাই যেন কেমন!

আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগে!

মাঝে মাঝে জীবন নিয়ে প্রচন্ড ভাবে চিন্তা করি,

কিন্তু চিন্তা করে জীবনের কোন অর্থ পাইনা,

কারন মানুষের পুরো জীবনটাই তো একটা চিন্তার কারখানা। 

আপনি যদি এর প্রমাণ চান তাহলে নিজেকে নিয়েই একটু ভাবুন,

ভাবলেই বুঝতে পারবেন পরিষ্কার ভাবে।

যখন একটা মানুষ বুঝতে শিখে ঠিক তখন থেকেই তার জীবনের পরাজয় শুরু হয়।

বুঝার পর থেকে শিক্ষা নিয়ে চিন্তা, 

শিক্ষার পর কর্ম নিয়ে চিন্তা, 

কর্মের পর পরিবার, 

পরিবারের পর মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়ার চিন্তা, 

পরকালের চিন্তা,  

সব কিছু যেন এক অসহ্যকর বিষয়। 

আবার এর মাঝেও জীবনে ঘটে যায় অনেক কল্পকাহিনি।

আর এসবের মাঝে মানুষ কি পারে তার জীবনকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিতে।

আমার কাছে মনে হয় পারেনা।

কিছুটা সময়ের জন্য হয়তো মানুষ তৃপ্তি পায়,

কিন্তু সার্বিক ভাবে কেউ-ই পারেনা জীবনকে জয়ী করতে।


দেখবেন মানুষ তার জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে কতো সংগ্রাম করে, কতো বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করে, 

আদৌও কি এর কোন সত্যিকার মূল্য আছে মানুষের জীবনে? 

আমার কাছে নাই। 

শুধু শুধু জীবনকে কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছুই না এগুলা।


জীবনের সবচেয়ে বড় এবং ভয়ংকর শত্রু কি জানেন?

তা হলো আবেগ,

বেশিভাগ জীবনের পরাজয় এই আবেগের কাছে।

অনেকে বলে তার আবেগ নাই,

আবেগ দিয়ে সে কাজ করেনা,

আবেগের বিরুদ্ধে জোর করে সেই কাজ থেকে দূরে থাকে,

কিন্তু আবেগের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই কাজ থেকে দূরে থাকাও তো পরাজয়।

কারন আবেগের বিরুদ্ধে কাজ করেও তো মনে শান্তি পাওয়া যায়না।

পাওয়া যায় কি শান্তি?  

একটু ভেবে দেখুন। 

এই জন্যই আমি বলি জীবন মানে পরাজয়।

ভিন্ন জন্যের ভিন্ন মতাদর্শ থাকতেই পারে।

কিন্তু গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখবেন মনে হবে আসলে পৃথিবীতে না জন্মালেই ভালো হত

না থাকতো দুঃখ, না থাকতো সুখ,

না থাকতো হতাশা আর না থাকতো প্রিয় জিনিস পাওয়ার আকাঙ্খা,

যে আকাঙ্খা নিয়েই চলে যেতে হবে একদিন সব কিছু ছেড়েছুড়ে হারিয়ে।

এরই নাম মানুষের জীবন, 

পরাজিত জীবন। 


এখন ভেবে বলুন আপনারা জীবন কি জয়ী?


✍️ লতিফুর রহমান পলাশ 






বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২

Latifur Rahman Palash

 



Latifur Rahman Palash is a poet and writer.

He was born on January 1, 1996.

His permanent address is Tangail Madhupur in Bangladesh.

His educational career started from Madhupur Shaheed Smriti High School in Tangail.

From there he passed SSC and HSC, graduated from a national university and completed his postgraduate degree from a private university.

While in primary school, writing became his handiwork.

From a young age, Palash was a man of thoughtful mind.

Always thinking and creating rhythm with everything since his childhood.

And from then on his literary life started.

He has given many popular poems and literature in his life.

রবিবার, ১ মে, ২০২২

বৃষ্টি



 "বৃষ্টি"

ওহে রিমঝিম বৃষ্টি 

তুমি সৃষ্টিকর্তার অপরূপ এক সৃষ্টি। 

ঝিরিঝিরি শব্দে যাও তুমি ঝরে,

মেঘ গুলো জল করো আকাশ শূন্য করে।

প্রকৃতিতে প্রাণের সঞ্চার তোমার ছোয়ায়,

তোমার প্রেমেতে মুগ্ধ তুমি করেছো আমায়।

তোমার রূপ, অপরূপ, মন কেড়ে যায়,

বর্ষাতে জলাধার যেন প্রাণ ফিরে পায়। 

আষাঢ় আর শ্রাবণে তোমার প্রভাব,

ঘুচিয়ে দেয় প্রকৃতির যতো জলের অভাব।


✍️ লতিফুর রহমান পলাশ

শুকতাঁরা



 "শুকতাঁরা"


দূর আকাশে একটা শুকতাঁরা মিটিমিটি জ্বলে,

কোন সঙ্গী নেই তাঁরাটার। 

একলা আপন মনে ভেসে বেড়ায়।

কিন্তু কিসের যেন শূন্যতা তার মাঝে। 

শুকতাঁরা, সে তো সঙ্গী বিহীন, তাইতো সে শুকতাঁরা।

শূন্যতা তার হৃদয়ে, তাইতো তার পরিপূর্ণ আলো নেই।

শূন্যতা ভরা হৃদয়, তাইতো জ্বলে আর নিভে।

আলো যা ছিলো, হয়তো তা দিয়ে আজ অন্যকোন তাঁরা আলোকিত।

তবুও তাঁরাটা নিশ্চুপ, কোন অভিযোগ নেই কারো প্রতি।

নিরবে হয়তো অশ্রুজলে সিক্ত হয় তাঁরাটি প্রতিনিয়ত।

আবার হয়তো বা একেবারে নিভে যাওয়ার প্রতীক্ষায় জ্বলজ্বল করে।

মাঝে মাঝে মেঘের আড়ালে হারিয়েও যায়,

স্বল্প আলো তাই মেঘ ভেদ করে কারো নজরেও আসতে পারেনা শুকতাঁরাটা।

খুব অসহায় লাগে তাঁরাটা কে।

হয়তো একেবারে জ্বলে উঠুক,

নয়তো একেবারে নিভে যাক।

কেন তার থাকতে হবে এ দুইয়ের মাঝামাঝি।

কোন আলোর অপেক্ষায় হয়তো তাঁরাটা এখনো রয়েছে।

কিন্তু আলো তো কেউ দিবেনা,

সবাই তো নিজেকে আলোকিত করতেই ব্যস্ত।

তাইতো সবাই আলাদা করে রেখেছে শুকতাঁরার অস্তিত্ব।

তাদের দলের বাইরে শুকতাঁরার স্থান।

যদি একটু আলো দিয়ে আলোকিত করতে হয় সেই ভয়ে

দূরত্ব বজায় রেখে চলে বাকি তাঁরারা।

তবুও কোন অভিযোগ নেই তার,

দূরে থেকেই তৃপ্ত সে।

ভালো থাকুক আর আলোকিত থাকুক না হয় তার বিলিয়ে দেওয়া আলোয় বাকি তাঁরা গুলো। 

আর নিভি নিভি আলোয় না হয় দূরে থেকেই দেখে যাবে অন্যদের উজ্জ্বল আলো। 

শূন্যতা গুলো না হয় নিজের কাছেই লুকিয়ে রাখুক আজীবন।

কষ্টের কোন ভাগিদার নাইবা করলো চলার পথে।

মেঘের আড়ালে হারিয়ে গেলে নাইবা হলো খোজার কোন সঙ্গী।

নিভি নিভি আলো রাঙিয়ে দেওয়ার নাইবা হলো কোন উজ্জ্বল আলো।

অশ্রুজল মুছে দেওয়ার নাই বা হলো কোন প্রতিবিম্ব। 

শূন্যতা ভরা হৃদয় নিয়ে তবুও বেঁচে থাকুক শুকতাঁরা।

সন্ধার আকাশে এ প্রান্তে আমিই না হয় হলাম তার সঙ্গী।

একই ধারায় বয়ে চলা দুটি জীবন প্রবাহের মিলের সঙ্গী।

দুজন দুজনার সঙ্গী।


✍️ লতিফুর রহমান পলাশ